আজো কাঁদে ৩২ নম্বর, রক্তঅশ্রুতে,
কাঁদে প্রতিটি দেয়াল, ইট, পাথর, আসবাব এমন কি?
সেই ইজিচেয়ারটা যেটায় বসে দুলতো স্থপতি
ঠোঁটের কোনে চুরুট আর মুখে স্মিত হাসি।
৩২নম্বরের বুকে একটাই ক্ষোভ কেন করলি রক্তাক্ত
ঝাঁঝরা করলি পিতার বুক ছিন্নভিন্ন মায়ের হৃদয়,
শুকোতে দিলি না নববধূর হাতের মেহেদী রং
করে দিলি আর গাড়ো থেকে গভীর লাল।।
চোখে তার বাসরশয্যার লজ্জারাঙা স্মৃতি
ভাবলে আলোড়িত হয় মন, টুকটুকে লাল অধর,
সুখানুভূতি রেশ হারায় নি কাজলকালো চোখের
স্তব্ধ করে দিলি সে স্বপ্নসুখের সুনীল স্থাপনা।।
আজো কাঁদে ৩২ নম্বর কি দোষ শিশু রাসেলের?
ছোট্ট রাসেল মাতৃস্নেহের আচলে বাধা চঞ্চল পাখি
হায়েনার কাছে করুণ আকুতি, মায়ের কাছে যাবো
ফুলের বুকে বুলেট চালাতেও বুক কাঁপেনি একটিবার।
কাঁদে সাদা পায়রার ঝাঁক একবুক যন্ত্রণা নিয়ে
মেঘের কাছে করছে নালিশ আর্তনাদ আর হাহাকারে,
কাঁদে সেই শোকার্ত সিঁড়ি, যার জীবন ধন্য হতো
সুকোমল হিমালয় আর বজ্রস্থপতির পদভারে।।
কাঁদে বাংলার আকাশ, বাতাস,বৃক্ষ তরুলতা
জন্মভূমির মাটি কাঁদে শোধিত হয়নি তোমার ঋণ,
যে মাটিতে ভিনদেশী শকুন তাড়িয়ে করেছো শালিকের আভাস
যে বাতাসে বিষ সরায়ে তুমি দিয়েছো দখিণা মলয়।।
উল্লাসে হাসে আজো হায়েনা শ্বদন্ত প্রকাশে
কামড় বসাতে চায় স্বাধীন বাংলার বুকের পাঁজরে,
বিষদাঁত ভেঙে দেবে তোমার ছেলেরা এসব হায়েনার
উপড়ে ফেলবে শিকড় সমূলে উৎপাটিত হবে বিষবৃক্ষ।।
তোমার নিধনে উল্লাস ছিল করেছে বুঝি সবশেষ
ওরা তো জানেনা তুমি মানে পুরোটাই বাংলাদেশ,
দহন, হাহাকার বুকেসুপ্ত একান্তর হওনি তুমি
তোমার ঋণ শোধিতে আজো কাঁদে ৩২ নম্বরের ভূমি।।
Post a Comment